
যে কারণে চীনে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেতে যাচ্ছেন ড. ইউনূস
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন চীন সফর আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম এই সফরের মুল বিষয়বস্তু।
যে কারণে চীনে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেতে যাচ্ছেন ড. ইউনূস
ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েন এবং চীনের সঙ্গে সম্পর্কের গুরুত্ব
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান করে, যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের সূত্রপাত করে। এ পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ড. ইউনূসের এই সফর সেই প্রচেষ্টারই অংশ।
বোয়াও ফোরামে অংশগ্রহণ এবং চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক
ড. ইউনূস ২৭ মার্চ হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। পরদিন বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানসূচক ডক্টরেট প্রদান
সফরের অংশ হিসেবে ড. ইউনূস পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেবেন এবং সেখানে তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এটি চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়কে আরও সুদৃঢ় করবে।
তিস্তা নদী প্রকল্প এবং চীনের ভূমিকা
বাংলাদেশের তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছে। এই সফরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হতে পারে, যা বাংলাদেশ-ভারত-চীন ত্রিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, এই প্রকল্প দ্রুত শুরু হলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে এবং চীন এ বিষয়ে প্রস্তুত।
চীনা বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি
চীনের শীর্ষস্থানীয় সৌর প্যানেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লংগি বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে গত ডিসেম্বরে চীনের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সফর করে বিনিয়োগের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে। এই সফরে চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলোচনা আরও গভীর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন চীন সফর বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা বাংলাদেশের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই সফর সেই প্রচেষ্টারই প্রতিফলন।