দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
চার দিনের যুক্তরাজ্য সফর শেষ করে দেশে ফিরলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস। যুক্তরাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ সফর সম্পাদন করেছিলেন তিনি — যা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে সুদূরপ্রসারিত ও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তথ্যটি নিশ্চিত করেছিলেন যে, ইউনুস ও তাঁর সফরসঙ্গীরা বাংলাদেশের উদ্দেশে লন্ডন ছাড়েন শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে বাংলাদেশের বিমানে চড়ে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের সম্পদ পুনরুদ্ধারে বিশেষ গুরুত্ব
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস যুক্তরাজ্য সফরকালে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন সম্পদ পুনরুদ্ধারের বিষয়ে। বাংলাদেশের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার ঘিরে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, তা প্রকাশ করাই ছিল এই সফরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকुल আলম বলেছিলেন যে, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশের ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাইরে পাচার হয়েছে — এর একটা অংশ রয়েছে যুক্তরাজ্যে। তাই সম্পদ পুনরুদ্ধার ও অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিচার করাই ছিল এই সফরের বিশেষ অগ্রাধিকার।
সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ জব্দ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলেছে যে সম্পদ পুনরুদ্ধার সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকারের সাথে বিশেষ আলোচনা হয়েছে। এর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ যুক্তরাজ্যে জব্দ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস ও ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে যে, এর মধ্য দিয়ে দুর্নীতিবাজ ও অপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করাই ন্যায় ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা। যুক্তরাজ্য সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করেছিলেন। বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবेशে সম্পন্ন হয়েছে।
সংলাপের অংশ হিসেবে তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নির্বাচন ও রাজনৈতিক পরিবेश নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোকপাত করেছিলেন। বিশেষ করে, ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে — তবে এর আগে রাজনৈতিক ও প্রশাসনগত সংস্কার সম্পাদন অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছিলেন ইউনুস।
সংলাপ ও রাজনৈতিক পরিবेशে স্থিতিশীলতা নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস আশা প্রকাশ করেছিলেন যে রাজনৈতিক পরিবेशে স্থিতিশীলতা ও স্বচ্ছতা আসলে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও কল্যাণ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।
সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ও বিশ্বাস আবারও সুসংহত হলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত আরও সুন্দর ও কল্যাণময় হতে পারে।
কিং চার্লস III হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ গ্রহণ করলেন ইউনুস
যুক্তরাজ্য সফরকালে অধ্যাপক ইউনুসকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত किया হয়। তাকে “কিং চার্লস III হারমনি অ্যাওয়ার্ড ২০২৫” দেওয়া হয়েছে — যা জীবনজুড়ে কল্যাণ ও শান্তির পক্ষে অমৃতধারা বইয়ে দেওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস বলেছিলেন যে এই অ্যাওয়ার্ড বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের কল্যাণ ও শান্তির আকাংক্ষার সাথে সম্পূর্ণ সম্পৃক্ত।
রাজা চার্লস ও হাউস অফ কমন্স স্পিকার সাথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক
অধিপ্রধান উপদেষ্টা ইউনুস এই সফরকালে ব্রিটিশ রাজা চার্লস III এর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এসময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক দুর্বলতা নিরসন এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিতে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের অংশীদারির সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করেছিলেন।
একই সাথে হাউস অফ কমন্সের স্পিকার ও অপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাথে বৈঠক ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন ইউনুস।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের সফর বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক
প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের যুক্তরাজ্য সফর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সংলাপ, দুর্নীতি দমন ও সম্পদ পুনরুদ্ধার, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করাই ছিল এই সফরের লক্ষ্য — যা অনেকটাই অর্জিত হয়েছে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের যুক্তরাজ্য সফর বাংলাদেশের অগ্রগতিতে আশার আলো প্রকাশ করেছে। দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ মোকাবিলা, রাজনৈতিক পরিবेशে স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রকাশিত হয়েছে এই সফর ঘিরে।
সংলাপ ও আলোচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ সুগম হতে পারে — যা দেশের সাধারণ জনগণের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।