সারাদেশে গণজমায়েতের ডাক দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ সম্প্রতি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশে গণজমায়েতের ডাক দিয়েছেন। এই আহ্বান দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এনসিপির তিন দফা দাবি
হাসনাত আবদুল্লাহ তাদের আন্দোলনের তিনটি মূল দাবি উপস্থাপন করেছেন:
-
আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা: তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
-
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচার: আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে দলগত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
-
জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি: জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।
গণজমায়েতের আহ্বান
সারাদেশে গণজমায়েতের ডাক দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। হাসনাত আবদুল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া, জুলাই আন্দোলনের সময় যেসব স্থানে গণজমায়েত হয়েছিল, সেসব স্থানেও একই সময়ে গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “এই লড়াই বাংলাদেশপন্থি বনাম ফ্যাসিবাদপন্থি লড়াই” ।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের অধীনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে। এনসিপি তাদের দাবিগুলো নিয়ে সক্রিয় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
শাহবাগ অবরোধ
শুক্রবার বিকালে এনসিপি শাহবাগ মোড় অবরোধ করে। আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান দেন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তারা ঘোষণা করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক ছাড়বেন না ।
অন্যান্য সংগঠনের অংশগ্রহণ
এনসিপির এই আন্দোলনে অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনও অংশগ্রহণ করেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা শাহবাগে উপস্থিত ছিলেন। তারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান দেন এবং পোস্টার প্রদর্শন করেন ।
ভবিষ্যৎ কর্মসূচি
সারাদেশে গণজমায়েতের ডাক দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। হাসনাত আবদুল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা হয়। তিনি বলেন, “আমরা জানি না এ কর্মসূচির শেষ কোথায়। যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে” ।
এনসিপির এই আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাদের তিন দফা দাবি ও সারাদেশে গণজমায়েতের আহ্বান দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আগ্রহভরে পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছেন।