
মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে তীব্র সামরিক সংঘাত হয়ে উঠেছে ইরান–ইসরায়েল সংঘর্ষ টানা পঞ্চম দিনে প্রবেশ করেছে। দুইপক্ষের রকেট ও বিমান হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ তেহরান ত্যাগের আহ্বান জানালেন, যা পরিস্থিতিতে নতুন উত্তেজনা যোগ করেছে। ।
পঞ্চম দিনে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: তেহরান ত্যাগের আহ্বান ট্রাম্পের
জুন ১৩ তারিখে ইসরায়েল “Operation Rising Lion” নামে বড় ধরনের বিমান ও ড্রোন আক্রমণ শুরু করে তেহরান ও ন্যাটান্জ পারমাণবিক স্থাপনায় ।
প্রতিক্রিয়ায় ইরান ১৫০–২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১০০–১২৫ ড্রোন ছুড়ে হামলা চালায় ইসরায়েলের দিকে ।
এই সিরিজের আঘাতে ইরানী পক্ষ জানায় টানা পাঁচ দিনে নিহত ২২৪ (বেশিরভাগ বেসামরিক), ইসরায়েলে নিহত ২৪ জন, আহত বহু ।
তেল আবিব, হাইফা সহ শহরগুলোর ওপর স্যরেন বাজে, বিস্ফোরণ শোনা যায়। তেহরানে ব্যাপক বিমান প্রতিরক্ষা কাজ করেছে, বিশেষ করে স্থাপনায়, যেমন ন্যাটান্জ ও পারমাণবিক কেন্দ্র ।
গোষ্ঠী ৭ (G7) শীর্ষ সম্মেলন কানাডায় ট্রাম্প এক দিন আগেই ছেড়ে আসে, হোয়াইট হাউস জানায় মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগজনক কারণে ।
তার Truth Social পোস্টে তিনি লিখেছেন, “Everyone should immediately evacuate Tehran!” কারণ তিনি মনে করেন, ইরান পারমাণবিক চুক্তি না মানায় মানব প্রাণের অপচয় হয়েছে ।
রাস্তা এক, ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র থাকতে পারবে না—তিনি বারবার এই বক্তব্য দিচ্ছেন।
হোয়াইট হাউজ ও প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ বারবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি আক্রমণে অংশ নিচ্ছে না, বরং প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে রয়েছে ।
পঞ্চম দিনে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: তেহরান ত্যাগের আহ্বান ট্রাম্পের। ইরান ওমান, কাতার ও সৌদি আরবের মাধ্যমে ট্রাম্পকে মাধ্যমে ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করার অনুরোধ করেছে। বিনিময়ে পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু হতে পারে ।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন—যদি ট্রাম্প আন্তরিক হন, তাইলে কূটনৈতিক পথ ফলপ্রসূ হতে পারে ।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ট্রাম্পের আগাম প্রত্যাবর্তন যুদ্ধবিরতি ওাপ্রকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখছে ।
তেহরান থেকে উত্তরাঞ্চলে বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু Exodus শুরু হয়েছে, শতশত হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ।
তেলের দাম বেড়েছে—WTI ও Brent সৌদি মার্কেটে ~২-৩% উর্ধ্বগতি ঘটেছে, বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তাজনিত মুদ্রায় আগ্রহী হয়েছে ।
বাজারে “safe‑haven” হিসেবে সোনা, ইউএস ট্রেজারি বন্ডে চাহিদা বেড়েছে; ইউএস স্টক ফিউচার, ইউরোপীয় সূচকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।
Mossad ও ইসরায়েলের মিলিত গতিবিধি: ড্রোন ও সামরিক উড়োজাহাজ মারফত ইরানের অন্তর্বাস কৰা স্যাটেলাইট উড়োজাহাজ ও ক্ষেপণাস্ত্র স্ট্রাকচার বিপর্যস্ত করেছে ।
ইসরায়েল বলছে—ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র-সম্পর্কিত ক্ষমতা টার্গেট করে ৬০ দিনের সময় দিয়েছিলো—এখন তা অতিক্রান্ত হয়েছে ।
ইরান প্রতিক্রিয়ায় ঘোষণা করেছে ভবিষ্যতে “largest and most intense missile attack” করার প্রস্তুতি নিচ্ছে
হেগসেথ জানান, মার্কিন প্রশাসন চুক্তির জন্যই কাজ করছে এবং তাদের ভূমিকা শুধুমাত্র প্রতিরক্ষামূলক ।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে—যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সরাসরি কোন আক্রমণ চালাচ্ছে না ।
কংগ্রেসেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে—“unauthorized military action” নিয়ে সংসদীয় তত্ত্বাবধানের দাবি উঠছে ।
তেল ও সোনা বাজারে সন্দেহ এতই, যোদ্ধা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিক্রিয়া বাড়ছে।
গঠিত শান্তি প্রস্তাব—জিও ৭ ও আঞ্চলিক মধ্যস্থতা (ওমান, কাতার, সৌদি) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, তবে ইসরায়েলকে সামরিক আক্রমণ বন্ধ করতে হবে ।
ইরান পর্যবেক্ষণ করছে—শুধুমাত্র ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ করলে ভাবিবেন কূটনৈতিক আলোচনায় বসতে পারেন ।
পঞ্চম দিনে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: তেহরান ত্যাগের আহ্বান ট্রাম্পের। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থার স্বরূপ– এটি শুধুই সামরিক সংঘাত নয়, এটি একটি জটিল ডিপ্লোম্যাটিক সংকট, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও বিশাল মানবিক বিপর্যয়ের সম্মিলিত প্রতিচ্ছবি। ট্রাম্পের “evacuate Tehran” আহ্বান একদিকে মার্কিন কূটনৈতিক কৌশলকেই নির্দেশ করে, অন্যদিকে পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র ইঙ্গিত করে যে—যুদ্ধ ও শান্তির লড়াই এখন কেবল যুদ্ধক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়; পারমাণবিক চুক্তি, বাজারের প্রতিক্রিয়া, গোষ্ঠী-৭ ও আঞ্চলিক মধ্যস্থতার রাজনৈতিক খেলা—সবকিছু মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে একটি বহুমাত্রিক পরিস্থিতি।