প্রথম বসন্ত

আজ  শুক্রবার ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি ,২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

আজ  শুক্রবার ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি ,২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

Click Here

নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি : এরদোয়ান

নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি : এরদোয়ানের কূটনৈতিক বার্তা

মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও ইরান ইস্যু দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান আলোচনার বিষয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই উত্তেজনা আরও জটিল রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সামরিক আগ্রাসন ও কৌশলগত অবস্থানের কারণে গোটা অঞ্চল আজ নিরাপত্তাহীনতার মুখে। এই প্রেক্ষাপটেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান নেতানিয়াহুকে “মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি” বলে অভিহিত করেছেন।

২০২৫ সালের ১৭ জুন, তুরস্কের প্রেসিডেন্সির অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান কাতারের আমির শেইখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে ফোনে আলাপ করেন। সেই আলাপেই তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নীতিকে এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।

এরদোয়ানের ভাষায়,
“নেতানিয়াহু আবারও প্রমাণ করেছেন, তিনি এই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।”

সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। ইসরায়েলের একাধিক হামলা ও গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে এরদোয়ান বলেন,
“ইসরায়েলের হামলা যেন গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় ও গণহত্যাকে আড়াল করে না, তা নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, এই সহিংসতা যেন সিরিয়াকে নতুন করে সংঘর্ষে না ঠেলে দেয়, সেদিকেও সজাগ থাকতে হবে।

গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার বোমা বর্ষণে শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। শত শত মানুষ আশ্রয় হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে। এই মানবিক সংকট বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিলেও কিছু পশ্চিমা দেশ এখনো ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি : এরদোয়ানএরদোয়ান বরাবরই গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তিনি শুধু কথায় নয়, কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমেও ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে সচেষ্ট হয়েছেন।

তুরস্ক জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তিনি চান, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক।

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি কাতারের আমিরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত যেন অন্য দেশেও ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলকে সতর্ক করেছেন।

তুরস্ক সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এরদোয়ানের দৃঢ় অবস্থান একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিনি একজন সাহসী নেতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।

তার এই বক্তব্য একদিকে যেমন ইসরায়েলের আগ্রাসী নীতির বিপরীতে তীব্র প্রতিবাদ, অন্যদিকে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

নেতানিয়াহু ও তার নীতিকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে এরদোয়ান নতুন করে আলোচনার সূচনা করেছেন। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা মনে করছেন, এই বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং মানবাধিকার রক্ষার আহ্বান।

আজকের মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির চেয়ে আগ্রাসনের আওয়াজই যেন প্রবল। এই অবস্থায় এরদোয়ানের মতো নেতারা যদি আরও সক্রিয় হন, তবে হয়তো একদিন যুদ্ধ থেমে শান্তির পতাকা উড়বে গাজা, তেহরান কিংবা দামাস্কাসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *