গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ১৪৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা চলমান সংঘাতের মধ্যে একটি ভয়াবহ মানবিক সংকটের ইঙ্গিত দেয়। এই হামলা, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন গিডিয়নের রথ’, ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী হামাসকে নির্মূল এবং জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় চব্বিশ ঘণ্টায় নিহত ১৪৬
২৪ ঘণ্টায় গাজায় প্রাণহানি: একটি ভয়াবহ চিত্র
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় অন্তত ১৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৪৫৯ জন। উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়া হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান আল-সুলতান জানান, রাত ১২টা থেকে এখন পর্যন্ত ৫৮ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ আটকে আছেন।
ইসরায়েলের সামরিক অভিযান: ‘অপারেশন গিডিয়নের রথ’
ইসরায়েলি বাহিনী ‘অপারেশন গিডিয়নের রথ’ নামে একটি নতুন সামরিক অভিযান শুরু করেছে, যার লক্ষ্য হামাসকে নির্মূল করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা। এই অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিমান হামলা চালাচ্ছে এবং সীমান্তে সাঁজোয়া যান মোতায়েন করছে।
মানবিক সংকট: হাসপাতাল ও ত্রাণের অবস্থা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় চব্বিশ ঘণ্টায় নিহত ১৪৬। গাজায় চলমান সংঘাতে হাসপাতালগুলো চরম সংকটে পড়েছে। ইন্দোনেশিয়া হাসপাতালসহ অন্যান্য চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ৭৬ দিন ধরে ত্রাণ সহায়তা বন্ধ থাকায় ফিলিস্তিনিরা মারাত্মক মানবিক সংকটে পড়েছে। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: নিন্দা ও উদ্বেগ
ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযানে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক এই হামলাকে ‘জাতিগত নিধনের’ শামিল বলে অভিহিত করেছেন। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
সংঘাতের পরিসংখ্যান: হতাহত ও বাস্তুচ্যুত
-
মোট নিহত: গাজায় চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৫৩,২৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
-
মোট আহত: আহতের সংখ্যা ১,২০,৬৭৩ জন ছাড়িয়ে গেছে।
-
বাস্তুচ্যুত: প্রায় ২০ লাখ মানুষের মধ্যে অধিকাংশই ঘরছাড়া।
শান্তি আলোচনা ও ভবিষ্যৎ করণীয়
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে কাতারে নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে এই আলোচনা থেকে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু দেখা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক মহলের উচিত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা।