২০২৫ সালের ১৫ মে, ফিলিস্তিনিরা ৭৭তম নাকবা দিবস পালন করলেন। এই দিনটি ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার সময় প্রায় ৭৫০,০০০ ফিলিস্তিনির উচ্ছেদ এবং তাদের ভূমি থেকে বিতাড়নের স্মরণে পালন করা হয়। তবে, এই বছরের নাকবা দিবসটি অতীতের চেয়ে আরও বেদনাদায়ক, কারণ গাজা এবং পশ্চিম তীরে চলমান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
উচ্ছেদ ও হত্যাযজ্ঞের মধ্যে আরেকটি নাকবা পার করলেন ফিলিস্তিনিরা
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি: ১৯৪৮ থেকে ২০২৫
১৯৪৮ সালের নাকবা ফিলিস্তিনিদের জীবনে একটি গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল। তবে, ২০২৫ সালে গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে। গাজা স্ট্রিপে ১.৭ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন, যা ১৯৪৮ সালের উচ্ছেদের চেয়েও বড় আকার ধারণ করেছে।
গাজায় মানবিক বিপর্যয়
উচ্ছেদ ও হত্যাযজ্ঞের মধ্যে আরেকটি নাকবা পার করলেন ফিলিস্তিনিরা। গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অনেক শিশু ও নারী রয়েছেন। বোমা হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের মতে, গাজায় প্রায় $১৮.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে, যা ফিলিস্তিনের মোট জিডিপির সমান।
পশ্চিম তীরে দমন-পীড়ন
পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান চলছে। জেনিন, তুলকারেম, নাবলুসসহ বিভিন্ন শহরে বাড়িঘর ধ্বংস, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নষ্ট এবং হাসপাতাল অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। এই অভিযানে ৪০,০০০-এরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, পোপ লিও চতুর্দশসহ অনেকেই ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে জাতিগত নিধন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ ও আশা
উচ্ছেদ ও হত্যাযজ্ঞের মধ্যে আরেকটি নাকবা পার করলেন ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকার রক্ষায় সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের আশা, একদিন তারা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন।
২০২৫ সালের নাকবা দিবস ফিলিস্তিনিদের জন্য শুধুমাত্র অতীতের স্মরণ নয়, বরং বর্তমানের বাস্তবতা। উচ্ছেদ, হত্যাযজ্ঞ এবং মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে তারা আরেকটি নাকবা পার করছেন। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের অধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।