প্রথম বসন্ত

আজ  বুধবার ৩০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি ,১৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

আজ  বুধবার ৩০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি ,১৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

Click Here

দোহায় ব্যর্থ আলোচনা, গাজায় ফের ইসরায়েলের স্থল অভিযান

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে আবারও গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হয়েছে। সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় এই অভিযান নতুন মাত্রা পেয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল যখন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে, তখন ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

দোহায় ব্যর্থ আলোচনা, গাজায় ফের ইসরায়েলের স্থল অভিযান

দোহা আলোচনার পটভূমি

দোহায় ব্যর্থ আলোচনা, গাজায় ফের ইসরায়েলের স্থল অভিযান দোহা আলোচনায় অংশ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিশর, ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা। আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধবিরতি, মানবিক সাহায্যের পথ উন্মুক্ত করা এবং গাজা উপত্যকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা।

আলোচনার প্রধান লক্ষ্য ছিল:

  • যুদ্ধবিরতির একটি সময়সীমা নির্ধারণ

  • মানবিক সহায়তা পাঠানোর নিশ্চয়তা

  • জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা

  • ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সমাধানের ভিত্তি স্থাপন

কিন্তু ইসরায়েল হামাসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়ার অভিযোগ করে এবং বলে, “সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আপস নয়।”

কেন ব্যর্থ হলো আলোচনা?

দোহায় ব্যর্থ আলোচনা, গাজায় ফের ইসরায়েলের স্থল অভিযান দোহায় আলোচনার ব্যর্থতার পেছনে রয়েছে পারস্পরিক অবিশ্বাস, কঠোর অবস্থান, এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য।

প্রধান কারণগুলো:

  1. হামাসের দাবি: স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও অবরোধ প্রত্যাহার

  2. ইসরায়েলের দাবি: জিম্মিদের মুক্তি এবং হামাসের নিরস্ত্রীকরণ

  3. যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপ: মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার

  4. বিশ্বাসযোগ্যতা সংকট: অতীত চুক্তি ভঙ্গের নজির

এই অবস্থায় দোহার আলোচনা শেষ হয় কোনো চুক্তি ছাড়াই। ফলে গাজা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

গাজায় ফের ইসরায়েলের স্থল অভিযান

দোহা আলোচনার ব্যর্থতার পরপরই ইসরায়েল আবারও গাজার বিভিন্ন অংশে ব্যাপক স্থল অভিযান শুরু করে। এতে ট্যাংক, কামান ও ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়।

অভিযান পরিচালিত অঞ্চলসমূহ:

  • রাফা সীমান্ত: দক্ষিণ গাজার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার

  • জাবালিয়া ও খান ইউনুস: পূর্বে ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও পুনরায় লক্ষ্যবস্তু

  • গাজার উত্তরাংশ: গোপন সুড়ঙ্গ ধ্বংস অভিযানের কেন্দ্রবিন্দু

ইসরায়েলের বক্তব্য:

“আমরা হামাসের শেষ ঘাঁটিও ধ্বংস না করা পর্যন্ত থামব না।”

মানবিক বিপর্যয়

ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুধু সামরিক হামলা নয়, এটি এক ভয়াবহ মানবিক সংকটের জন্ম দিয়েছে।

কী কী ঘটছে গাজায়?

  • বিদ্যুৎ ও পানির অভাব

  • চিকিৎসাসেবা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে

  • স্কুল ও হাসপাতাল লক্ষ্যবস্তু

  • প্রায় ৩০,০০০ মানুষ নিহত (এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু)

  • বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ২০ লক্ষ ছাড়িয়েছে

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, “গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যার কাছাকাছি।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বিশ্ব নেতৃবৃন্দ, আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ এই স্থল অভিযানকে নিন্দা জানাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র:

যদিও তারা ইসরায়েলের নিরাপত্তা স্বীকার করে, কিন্তু রাফায় অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘ:

“গাজায় যুদ্ধবিরতি জরুরি, না হলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ হবে।”

ইউরোপীয় ইউনিয়ন:

তাদের মতে, “শিশুদের মৃত্যু কখনোই নিরাপত্তার অজুহাত হতে পারে না।”

মুসলিম বিশ্ব:

তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক, ইরান, মালয়েশিয়া ও কাতার। তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে।

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশের জনগণ গাজায় হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার। ঢাকায়, চট্টগ্রামে ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দোহায় আলোচনার ব্যর্থতা এবং গাজায় ইসরায়েলের পুনরায় স্থল অভিযান মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা আরও বিপন্ন করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা এবং একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *