প্রথম বসন্ত

আজ  রবিবার ২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা সফর, ১৪৪৭ হিজরি ,১২ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

আজ  রবিবার ২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা সফর, ১৪৪৭ হিজরি ,১২ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

Click Here

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতির দ্বিতীয় দিনে স্থবির এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তিন দিনের কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করছেন। এই কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে এনবিআরের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতির দ্বিতীয় দিনে স্থবির এনবিআর

 কলম বিরতির পটভূমি

গত ১২ মে রাতে সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করে নবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে তিন দিনের কলম বিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচি ১৪ মে থেকে শুরু হয়ে ১৭ মে পর্যন্ত চলবে।

 কলম বিরতির সময়সূচি

  • ১৪ মে (বুধবার): সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।

  • ১৫ মে (বৃহস্পতিবার): সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।

  • ১৭ মে (শনিবার): সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।সেবা ও রপ্তানি কার্যক্রম কলম বিরতির আওতামুক্ত থাকবে।

 কর্মকর্তাদের দাবিসমূহ

  1. অধ্যাদেশ বাতিল: এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

  2. পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ: রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।

  3. অংশগ্রহণমূলক সংস্কার: প্রত্যাশী সংস্থাসমূহ, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সব অংশীজনের মতামত নিয়ে সমন্বিত, অংশগ্রহণমূলক ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে।

কর্মকর্তারা মনে করেন, এই অধ্যাদেশটি গোপনীয়ভাবে জারি করা হয়েছে এবং এতে অংশীজনদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে।

 কলম বিরতির প্রভাব

কলম বিরতির ফলে এনবিআরের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। রাজস্ব আদায় কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম প্রায় বন্ধ রয়েছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতির কারণে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে এবং বন্দর থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।

 কর্মকর্তাদের বক্তব্য

আন্দোলনরত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এনবিআর তথা রাজস্ব প্রশাসন সংস্কারের বিরোধী নন। তারা চান, এই সংস্কার যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হবে, দেশের স্বার্থ ও উন্নয়নধর্মী দর্শন এতে প্রতিফলিত হবে। তারা আরও বলেন, রাজস্ব প্রশাসন অধিকতর কার্যকর, প্রগতিশীল ও দুর্নীতিমুক্ত হবে এবং সংস্কার কোনো গোষ্ঠীগত কায়েমি স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হবে না।

 ভবিষ্যৎ কর্মসূচি

১৭ মে শনিবার কলম বিরতির শেষ দিন। এই দিন বিকেল ৩টায় আন্দোলনরত কর্মকর্তারা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতির দ্বিতীয় দিনে স্থবির এনবিআর,  এই প্রতিবাদ কর্মসূচি বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবি ও সরকারের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে রাজস্ব প্রশাসনের কাঠামো কিভাবে গঠিত হবে, তা সময়ই বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *