
বন্ধ হয়ে যাবে হাজার হাজার ট্রাভেল এজেন্সি
বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সি খাতে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকট দেখা দিয়েছে, যা হাজার হাজার এজেন্সির ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় নতুন একটি পরিপত্রের খসড়া প্রস্তুত করেছে, যা কার্যকর হলে প্রায় ৫,২০০ ট্রাভেল এজেন্সি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নতুন পরিপত্রের প্রস্তাবনা ও এর প্রভাব
প্রস্তাবিত পরিপত্রে ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর জন্য কঠোর নিয়মাবলী আরোপের কথা বলা হয়েছে, যা ছোট ও মাঝারি আকারের এজেন্সিগুলোর জন্য পালন করা কঠিন হতে পারে। ফলে, এরা ব্যবসা চালিয়ে যেতে অক্ষম হতে পারে, যা তাদের বন্ধের দিকে নিয়ে যাবে।
বর্তমান পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫,৭৪৬টি লাইসেন্সধারী ট্রাভেল এজেন্সি রয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ৯৭০টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (IATA) স্বীকৃত। এই ৯৭০টির মধ্যে কেবল ৩৫০টি এজেন্সির বড় এয়ারলাইনসের টিকিট বিক্রির অনুমতি রয়েছে। ফলে, বাকি ৫,০০০-এরও বেশি এজেন্সি এই ৩৫০টি এজেন্সির উপর নির্ভরশীল।
সম্ভাব্য সমাধান ও সুপারিশ
ট্রাভেল এজেন্সি খাতের এই সংকট মোকাবেলায় নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
-
সহজ ও গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন: নতুন পরিপত্র প্রণয়নের সময় ছোট ও মাঝারি আকারের এজেন্সিগুলোর সক্ষমতা বিবেচনা করে নীতিমালা তৈরি করা উচিত, যাতে তারা সহজেই তা পালন করতে পারে।
-
আলোচনা ও পরামর্শ: নীতিমালা চূড়ান্ত করার আগে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা ও পরামর্শ করা উচিত, যাতে সবার মতামত প্রতিফলিত হয়।
-
প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান: এজেন্সিগুলোকে নতুন নীতিমালা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা উচিত, যাতে তারা সহজেই নতুন নিয়মাবলী মেনে চলতে পারে।
-
ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন: নীতিমালা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে প্রয়োগের ব্যবস্থা করা উচিত, যাতে এজেন্সিগুলো পর্যাপ্ত সময় পায় নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য।
বন্ধ হয়ে যাবে হাজার হাজার ট্রাভেল এজেন্সি। বাংলাদেশের ট্রাভেল এজেন্সি খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা খাত, যা দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এই খাতের সুষ্ঠু বিকাশ ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে ছোট ও মাঝারি আকারের এজেন্সিগুলো টিকে থাকতে পারে এবং গ্রাহক সেবা অব্যাহত রাখতে পারে।