
গৃহযুদ্ধের মুখে ইসরাইল
ইসরায়েল বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সংকটে নিমজ্জিত, যেখানে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তীব্রতর হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলো দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
শিন বেত প্রধানের বরখাস্ত ও প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এই পদক্ষেপের পরপরই সুপ্রিম কোর্ট আগামী ৮ এপ্রিল পর্যন্ত বরখাস্তাদেশ স্থগিত করেছে। তবুও, নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা দেশের ভেতরে তীব্র বিরোধ ও বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েল বিজনেস ফোরাম (আবিএফ) হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, যদি সরকার সুপ্রিম কোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে, তবে তারা দেশের অর্থনীতি অচল করে দেবে। এছাড়া, শ্রমিক ইউনিয়ন হিসতাদ্রুতের প্রধান আরমোন বার-ডেভিডও দেশব্যাপী ধর্মঘটের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি সরকারের প্রতি আদালতের আদেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রেসিডেন্টের উদ্বেগ
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহারন বারাক সতর্ক করেছেন যে, শিন বেতের প্রধান এবং অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্ত করার মাধ্যমে নেতানিয়াহুর সরকার ইসরায়েলে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করছে। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, জনগণের মধ্যে বিভাজন বাড়ছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা নাকচ করে বলেছেন, “কোনো গৃহযুদ্ধ হবে না। ইসরায়েলি সরকারই সিদ্ধান্ত নেয় শিন বেতের প্রধান কে হবেন।” তিনি দাবি করেছেন যে, রোনেন বারের ওপর তার আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন, তাই তাকে বরখাস্ত করছেন।
নাগরিক প্রতিক্রিয়া ও বিক্ষোভ
শিন বেতের প্রধানকে বরখাস্ত করার পর সাধারণ ইসরায়েলিরা ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু করেছেন। তাদের মতে, নেতানিয়াহু স্বৈরশাসকের মতো আচরণ করছেন এবং বিরোধী মতের রোনেন বারকে বরখাস্ত করছেন যাতে কেউ তার কাজে বাধা না দিতে পারে।
গাজা সংঘর্ষ ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
গাজায় চলমান সংঘর্ষের মাঝেই ইসরায়েলে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তীব্রতর হয়েছে। গাজার যুদ্ধ ইসরায়েলি সমাজকে নজিরবিহীন চাপের মধ্যে ফেলেছে, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন বাড়িয়ে দিয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি
গৃহযুদ্ধের মুখে ইসরাইল। ইসরায়েলের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সরকারের সিদ্ধান্ত ও জনগণের প্রতিক্রিয়া দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা এড়াতে সরকারের উচিত সুপ্রিম কোর্টের আদেশ মেনে চলা এবং জনগণের মতামতকে সম্মান করা।