১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না
হজ ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দায়িত্ব। প্রতি বছর বিশ্বের লাখ লাখ মুসলমান সৌদি আরবের মক্কায় হজ পালনের জন্য সমবেত হন। তবে সাম্প্রতিক নিয়ম অনুযায়ী, ১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না। এই সিদ্ধান্তের পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন নিয়ম ও বিধিনিষেধ
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, ১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না এবং ১৫ বছরের কম বয়সী কোনো শিশু বা কিশোর হজে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এই বিধিনিষেধ মূলত হজ ব্যবস্থাপনা, ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং শিশুদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণ
হজ একটি শারীরিকভাবে কঠিন ও ক্লান্তিকর ইবাদত। এতে প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘ সময় হাঁটা, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান, মিনা ও মুজদালিফায় রাতযাপনসহ শারীরিকভাবে চ্যালেঞ্জিং অনেক বিষয় রয়েছে। ১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না কারণ এই শারীরিক কষ্ট শিশুদের জন্য সহ্য করা কঠিন হতে পারে। তাছাড়া, বড় ভিড়ের মধ্যে শিশুদের নিরাপদ রাখা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।
হজ ব্যবস্থাপনার সহজীকরণ
প্রতি বছর হজে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এতো বিশাল জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না—এই নিয়ম কার্যকর হলে হজ ব্যবস্থাপনা আরও সহজ হবে এবং প্রাপ্তবয়স্ক হজযাত্রীরা নির্বিঘ্নে ইবাদত করতে পারবেন।
শিশুদের জন্য ওমরাহ বিকল্প
যদিও ১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না, তবে ওমরাহ করার সুযোগ রয়েছে। ওমরাহ হজের মতো কঠিন না হওয়ায় শিশুদের জন্য এটি বেশি উপযুক্ত। অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের নিয়ে ওমরাহ সম্পন্ন করে, যা একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।
ধর্মীয় ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা
শরীয়ত অনুযায়ী, হজ একটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জন্য আবশ্যিক। তাই শিশুরা যদি হজ পালন করে, সেটি তাদের বাধ্যতামূলক হজ হিসেবে গণ্য হবে না। ইসলামী স্কলারদের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর হজ সম্পাদন করাই যথাযথ। ১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না—এই নিয়মটি ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও গ্রহণযোগ্য।
১৫ বছরের নিচে কেউ হজে যেতে পারবে না—এই নিষেধাজ্ঞা মূলত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও ব্যবস্থাপনার কারণে জারি করা হয়েছে। এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য উপকারী এবং দীর্ঘমেয়াদে হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে। তাই অভিভাবকদের উচিত তাদের সন্তানদের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং উপযুক্ত সময়ে হজ পালনের ব্যবস্থা করা।