প্রথম বসন্ত

আজ  রবিবার ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি ,১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

আজ  রবিবার ১৫ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি ,১লা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

Click Here

“স্টারলিংক ইন্টারনেট: বাংলাদেশের ডিজিটাল বিপ্লবে নতুন দিগন্ত”

“স্টারলিংক ইন্টারনেট: বাংলাদেশের ডিজিটাল বিপ্লবে নতুন দিগন্ত”

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক চালু হলে ভবিষ্যতে কোনো সরকার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে মানুষকে তথ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করার সুযোগ পাবে না।

স্টারলিংক হলো ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের একটি প্রকল্প, যা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে। বাংলাদেশে স্টারলিংক সেবা চালু হলে দেশের প্রতিটি গ্রাম, দ্বীপাঞ্চল ও দুর্গম পাহাড়ি এলাকাও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবার আওতায় আসবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেছেন যে, স্টারলিংকের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতে বিপ্লব আনবে। এর ফলে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে বিশ্বমানের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যাবে। নতুন প্রজন্ম দেশের যেকোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলেই থাকুক না কেন, তারা বিশ্ব নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালুর জন্য ইতিমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে আলাপ করে বাংলাদেশে স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন। সে অনুসারে, কোম্পানির প্রতিনিধিরা এখন বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরুর আয়োজন করছে, এবং তিন মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।

আগামী ৯ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেটের পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হতে যাচ্ছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে, এবং ৯০ দিনের মধ্যে এটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে।

“স্টারলিংক ইন্টারনেট: বাংলাদেশের ডিজিটাল বিপ্লবে নতুন দিগন্ত”। স্টারলিংক সেবা চালুর ফলে বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। বর্তমানে ইন্টারনেট সেবা প্রধানত সাবমেরিন কেবল ও স্থলভিত্তিক অবকাঠামোর ওপর নির্ভরশীল। স্টারলিংক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে, যা ভূ-রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা ও অবকাঠামোগত সমস্যাগুলোকে অতিক্রম করতে সক্ষম।

তবে, স্টারলিংক সেবা চালুর ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। প্রথমত, সেবার খরচ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্টারলিংকের সেবা গ্রহণের জন্য গ্রাহকদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে, যা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জন্য কতটা সাশ্রয়ী হবে তা বিবেচনা করা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, যা সাইবার নিরাপত্তা ও নীতিমালার ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।

সর্বশেষে, স্টারলিংক সেবা চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবা ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হবে। এটি দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোকে শক্তিশালী করবে এবং জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে সুরক্ষিত করবে। তবে, সেবা চালুর আগে এর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও নীতিমালা গ্রহণ করা জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *