স্টারলিংকের সঙ্গে বাংলাদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারত্ব চুক্তি
ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে প্রবেশের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করতে সক্ষম। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে স্টারলিংক বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
স্টারলিংকের সঙ্গে বাংলাদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারত্ব চুক্তি
২০২৩ সালের জুলাই মাসে স্টারলিংকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স ম্যানেজার জোয়েল মেরিডিথ এবং গ্লোবাল লাইসেন্সিং অ্যান্ড অ্যাক্টিভেশন ম্যানেজার পার্নিল উর্ধারশি বাংলাদেশ সফর করেন। তারা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদের সঙ্গে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি ভবনে বৈঠক করেন। বৈঠকে স্টারলিংকের সেবা বাংলাদেশের দুর্গম অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদানের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
স্টারলিংক বাংলাদেশে তাদের সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার জন্য দুটি ডিভাইস সরবরাহ করেছে। এই ডিভাইসগুলোর একটি বাসের ভেতরে এবং অন্যটি প্রত্যন্ত কোনো দ্বীপে স্থাপন করা হবে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে স্টারলিংকের সেবা দেশের বিভিন্ন পরিবেশে কেমন কার্যকর হয়, তা মূল্যায়ন করা হবে।
বাংলাদেশ সরকার স্টারলিংকের সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করেছে। এর মধ্যে প্রধান শর্ত হলো, দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে সরকারের বিধিসম্মত প্রবেশাধিকারের (ল’ফুল ইন্টারসেপশন) নীতি মেনে চলা। অর্থাৎ, স্টারলিংকের সেবা ব্যবহারের সময় সরকার প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নজরদারি করতে পারবে। এ বিষয়ে স্টারলিংককে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।
স্টারলিংকের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। বৈঠকে স্টারলিংকের সেবা দেশের বিদ্যমান অবকাঠামোকে কতটা চ্যালেঞ্জ করবে এবং এই সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কী ধরনের প্রযুক্তিগত ও নীতিগত বিষয় বিবেচনা করতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্টারলিংকের সেবা বাংলাদেশে চালু হলে দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান সহজ হবে। তবে, সেবার খরচ, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং সরকারের নজরদারি নীতিমালা মেনে চলা—এই সব বিষয় স্টারলিংকের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। সরকার ও স্টারলিংক উভয়ের মধ্যে এই বিষয়গুলো নিয়ে আরও আলোচনা ও সমন্বয় প্রয়োজন।
স্টারলিংকের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব চুক্তি দেশের প্রযুক্তি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা দেশের দুর্গম অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে, সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারের শর্তাবলী ও নীতিমালা মেনে চলা স্টারলিংকের জন্য অপরিহার্য।