মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন আবরার ফাহাদ: ন্যায়ের পথে এক অনন্য স্বীকৃতি
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক ২০২৫’ মরণোত্তরভাবে প্রদান করা হচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে ছাত্রলীগের কিছু সদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়া এই মেধাবী শিক্ষার্থী তার সাহসিকতা ও মুক্ত চিন্তার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন।
মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন আবরার ফাহাদ: ন্যায়ের পথে এক অনন্য স্বীকৃতি
কুষ্টিয়ার রায়ডাঙ্গা গ্রামের সন্তান আবরার ফাহাদ ছিলেন একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তিনি বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন। তার সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও মুক্তচিন্তার জন্য সহপাঠীদের মধ্যে তিনি ছিলেন জনপ্রিয়।
সোমবার (৩ মার্চ) ভোরে ফেসবুকে এক পোস্টে আবরার ফাহাদকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করার তথ্য জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ওই পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ লেখেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহসিকতার প্রতীক, মুক্তচিন্তার এক প্রতিচ্ছবি—আবরার ফাহাদ। মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক ২০২৫- এর ভূষিত হওয়া তার আত্মত্যাগের স্বীকৃতি। তার আদর্শ আমাদের আলোকিত করে, ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়। জাতি তোমাকে ভুলবে না, আবরার!
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করে। তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে এই হামলা চালানো হয়। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে|
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক ২০২৫’ মরণোত্তরভাবে প্রদান করা হচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। স্বাধীনতা পদক বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা, যা ১৯৭৭ সাল থেকে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়। এ বছর মরণোত্তরভাবে আবরার ফাহাদকে এই পদক প্রদান করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে এক পোস্টে এ তথ্য জানান|
আবরার ফাহাদের সাহসিকতা ও মুক্তচিন্তার প্রতীক হিসেবে তাকে এই পদক প্রদান করা হচ্ছে। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী মনে করেন, আবরার ফাহাদের ক্যাটাগরি হওয়া উচিত ‘মুক্তিযুদ্ধ’, কারণ স্বাধীনতার প্রধান শর্ত সার্বভৌমত্ব, আর সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড ছিলেন আবরার ফাহাদ।
আবরার ফাহাদকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রদানের খবরে সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রশংসা ও সমর্থন প্রকাশ পেয়েছে। তার আত্মত্যাগ ও সাহসিকতা নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
আবরার ফাহাদের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রাপ্তি তার আত্মত্যাগের স্বীকৃতি এবং সমাজে ন্যায়বিচার ও মুক্তচিন্তার মূল্যায়ন। তার আদর্শ ও সাহসিকতা আমাদের আলোকিত করে এবং ন্যায়ের পথে চলতে অনুপ্রেরণা জোগায়।