প্রথম বসন্ত

আজ  বুধবার ৩০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি ,১৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

আজ  বুধবার ৩০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি ,১৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

Click Here

ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত বেড়ে ১৪৪, থাইল্যান্ডেও ধ্বংসযজ্ঞ

ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত বেড়ে ১৪৪, থাইল্যান্ডেও ধ্বংসযজ্ঞ

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে সম্প্রতি সংঘটিত শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৪ জনে পৌঁছেছে, এবং থাইল্যান্ডেও উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে।

ভূমিকম্পের বিবরণ

শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ তারিখে স্থানীয় সময় দুপুর ১২:৫০ মিনিটে মিয়ানমারের সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরতায় ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কিছুক্ষণ পরেই ৬.৪ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

মিয়ানমারে ক্ষয়ক্ষতি

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইং জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে রাজধানী নেপিদোতে ৯৬ জন, সাগাইংয়ে ১৮ জন এবং মান্দালয়ে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। আহতদের সংখ্যা ৭৩২ জন, যার মধ্যে নেপিদোতে ১৩২ জন এবং সাগাইংয়ে ৩০০ জন আহত হয়েছেন।

​ভূমিকম্পের ফলে মান্দালয়ে একটি মসজিদ ধসে পড়ে, যেখানে নামাজ আদায়রত অবস্থায় অনেকে হতাহত হন। এছাড়াও, ইরাবতী নদীর উপর নির্মিত ৯১ বছর বয়সী ঐতিহাসিক আভা সেতু ধসে পড়েছে, যা মান্দালয় এবং সাগাইং অঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করত।

​থাইল্যান্ডে প্রভাব

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন ধসে পড়েছে, যেখানে ১০ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও, ১০১ জন নিখোঁজ রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা ব্যাংককে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ভূমিকম্পে মিয়ানমারে নিহত বেড়ে ১৪৪, থাইল্যান্ডেও ধ্বংসযজ্ঞমিয়ানমারের সামরিক সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সমন্বয় করছে। তবে, মিয়ানমারের চলমান গৃহযুদ্ধ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রমে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।

ভূমিকম্পের ভূগোলিক কারণ

মিয়ানমার সাগাইং ফল্ট লাইনের উপর অবস্থিত, যা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে ৭.০ মাত্রার ছয়টি ভূমিকম্প এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে। ২০১৬ সালে বাগান শহরে ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তিনজন নিহত হন এবং বহু প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডে সংঘটিত এই ভূমিকম্প দুই দেশের জন্য একটি বড় বিপর্যয়। উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এমন দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *