ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতকারী ফেরত পাবেন সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা
বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রয়োজনীয়তা
বর্তমানে প্রচলিত আইনে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে আমানতকারীরা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা ফেরত পান। তবে, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২০ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে আমানতকারীদের সুরক্ষা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশের মূল বিষয়বস্তু
প্রস্তাবিত ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হলে বা বন্ধ হয়ে গেলে, আমানতকারীরা সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত পাবেন। এই সীমা আগের ১ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অধ্যাদেশের প্রভাব ও গুরুত্ব
ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতকারী ফেরত পাবেন সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা। এই নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে আমানতকারীদের মধ্যে ব্যাংকিং খাতের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আমানত সুরক্ষা সীমা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণ তাদের সঞ্চয় ব্যাংকে জমা রাখতে আরও উৎসাহিত হবে, যা দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
চ্যালেঞ্জ ও সুপারিশ
তবে, এই অধ্যাদেশ কার্যকর করতে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কার্যকর তদারকি প্রয়োজন। এছাড়া, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা সুপারিশ করছেন যে, ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো উচিত।
‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রস্তাবিত খসড়া দেশের ব্যাংকিং খাতে আমানতকারীদের সুরক্ষা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতকারী ফেরত পাবেন সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা। এই উদ্যোগ আমানতকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়তা করবে। তবে, এই অধ্যাদেশ কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।