বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব বই পাবে শিক্ষার্থীরা: একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন শিক্ষাবর্ষের সূচনা মানেই নতুন বইয়ের আগমন। প্রতি বছর ১ জানুয়ারি ‘বই উৎসব’ পালনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হয়। তবে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এই প্রক্রিয়ায় কিছু চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
বই বিতরণের প্রস্তুতি ও চ্যালেঞ্জ
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৪০ কোটির বেশি বই ছাপানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরের জন্য ৯ কোটি ৩৮ লাখ এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য প্রায় ৩১ কোটি ১৬ লাখ বই ছাপানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে বছরের শেষ দিন পর্যন্ত সব বই ছাপা সম্ভব হয়নি, ফলে বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
মুদ্রণ প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে জানুয়ারির প্রথম দিনে সব বই বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। এনসিটিবি জানিয়েছে, জানুয়ারির ৫ তারিখের মধ্যে দশম শ্রেণির সব বই বিতরণের পরিকল্পনা ছিল, তবে বাস্তবে তা সম্ভব হয়নি।
শিক্ষার্থীদের জন্য বইয়ের গুরুত্ব
বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব বই পাবে শিক্ষার্থীরা| নতুন বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা ও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে। বই পাওয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। তবে বই বিতরণে বিলম্ব হলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এতে সিলেবাস শেষ করতে দেরি হতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
বই বিতরণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা
বই সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে বই বিতরণ কার্যক্রম চলছে। কোনো শিক্ষার্থী যেন বই থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য বিশেষ তদারকি করা হচ্ছে। এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ. কে. এম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, নিম্নমানের বই ছাপালে এবং নির্ধারিত সময়ে বই দিতে ব্যর্থ হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের করণীয়
শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুসরণ করা এবং নির্ধারিত সময়ে বই সংগ্রহ করা। কোনো কারণে যদি কেউ বই না পায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়া, অনলাইনে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে বইয়ের পিডিএফ সংস্করণ পাওয়া যায়, যা শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারে।
বই বিতরণে বিলম্ব সত্ত্বেও, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের হাতে দ্রুত বই পৌঁছে দিতে নিরলস পরিশ্রম করছে। শিক্ষার্থীদের উচিত এই সময়ে ধৈর্য ধরে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া এবং অনলাইন রিসোর্স ব্যবহার করা। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে এবং নতুন শিক্ষাবর্ষের সূচনা আরও সফল হবে।