
বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করার অঙ্গীকার দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের
দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছেন, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন ও বিনিয়োগ সহযোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেছেন যে, কোরিয়া একসময় ৩০০-৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রদান করলেও, বর্তমানে তা ছয় বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল এবং জাহাজ নির্মাণ খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে, তারা উল্লেখ করেছেন যে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং উচ্চ হারে শুল্ক বাধা সৃষ্টি করছে। কোরিয়ান দূতাবাস বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্যের তালিকা তৈরি করে তা পরবর্তী বাজেটে কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (EPA) স্বাক্ষরের বিষয়টি বিবেচনা করছে, যা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ কোরিয়ার বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকার এবং কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে নতুন সুযোগ সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে আগ্রহী। তারা মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে পানি সরবরাহ প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন। এই প্রকল্পগুলো কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা মূল্যায়নে সহায়ক হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে অন্যতম প্রধান বিনিয়োগকারী। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০০টি কোরিয়ান কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার মধ্যে ৭০ শতাংশেরও বেশি তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে নিযুক্ত। এই কোম্পানিগুলো প্রায় ১,৫০,০০০ বাংলাদেশি শ্রমিককে কর্মসংস্থান প্রদান করছে।
বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ করার অঙ্গীকার দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের। দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীদের এই অঙ্গীকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা হ্রাস এবং শুল্ক নীতিমালায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। এছাড়া, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করা সম্ভব।