ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের গর্জন: সারা দেশে বিক্ষোভ ও সমাবেশ
ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে একত্রিত পুরো বাংলাদেশ
ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলা, গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে বাংলাদেশের মানুষ। সোমবার সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকায় বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু: শহিদ মিনার, রাজু ভাস্কর্য, মার্কিন দূতাবাস
ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের গর্জন: সারা দেশে বিক্ষোভ ও সমাবেশ। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয় সংহতি সমাবেশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ছিল ছাত্রদের প্রতিবাদ কর্মসূচি। একইসাথে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটে বিক্ষোভ হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাসের সামনেও দিনভর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় উত্তাল জনতা
ঢাকার যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, মিরপুর, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, রামপুরা, পুরান ঢাকা, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ব্র্যাক, ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থ সাউথ, আইইউবি, এআইইউবি, ইউআইইউসহ বহু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ‘দি ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির সাথে সংহতি প্রকাশ করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভে অংশ নেন।
জাতীয় ও আঞ্চলিক সমাবেশ
ঢাকার বাইরে কুমিল্লা, ফরিদপুর, নীলফামারী, লক্ষ্মীপুর, সাতক্ষীরা, রাজবাড়ী, জয়পুরহাট, বান্দরবান, নাটোর, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, বরিশাল, খুলনা, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
ইসরাইলি পণ্য বয়কট ও প্রতীকী হামলা
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, বগুড়াসহ কয়েকটি জেলায় কে এফ সি, পিৎজা হাট, বাটা ও কোকাকোলা‘র দোকানে ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা।
ইসলামী ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর কর্মসূচী
-
জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, ওলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি—সবাই পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করে।
-
ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস ও সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটও অংশ নেয়।
-
বক্তারা জাতিসংঘ ও ওআইসি’র নীরব ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন।
মার্কিন দূতাবাস ঘেরাও ও মানবপ্রাচীর
মার্কিন দূতাবাসের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজারো মানুষ। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কড়া নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন। মার্কিন দূতাবাসের আশপাশে সেনাবাহিনী মানবপ্রাচীর তৈরি করে।
ছাত্রদলের কর্মসূচি ও আজকের পদযাত্রা
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
এছাড়াও, আজাদ ফিলিস্তিন প্ল্যাটফর্ম বিকাল ৩:৩০টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও ও মার্কিন দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রা করবে।
ইসরাইলের আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের এ ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও মানবতার পক্ষে এই গণজাগরণ অব্যাহত থাকবে—এটাই জনগণের প্রত্যাশা।