প্রথম বসন্ত

আজ  শনিবার ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি ,৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

আজ  শনিবার ১৪ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি ,৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ 

Click Here

প্রত্যাবাসনের আশায় বুক বাঁধছেন রোহিঙ্গারা

প্রত্যাবাসনের আশায় বুক বাঁধছেন রোহিঙ্গারা

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সাম্প্রতিক ঢাকা সফর এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বৈঠক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। প্রত্যাবাসনের দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকা এই জনগোষ্ঠী এখন নতুন করে স্বপ্ন দেখছে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার।

 

প্রত্যাবাসনের আশায় বুক বাঁধছেন রোহিঙ্গারা

প্রত্যাবাসনের আশায় বুক বাঁধছেন রোহিঙ্গারা

ক্যাম্প জীবনের ক্লান্তি:

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গারা প্রায় আট বছর ধরে অস্থায়ী আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য সহায়তার ঘাটতি, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার অভাব। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে জনপ্রতি খাদ্য সহায়তা ১২.৫ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলারে নামিয়ে আনা হতে পারে। এই পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

প্রত্যাবাসনের প্রত্যাশা:

জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রত্যাবাসনের আশাকে পুনর্জীবিত করেছে। তারা বিশ্বাস করেন, এই সফরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আবারও তাদের সমস্যার দিকে আকৃষ্ট হবে এবং প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। ক্যাম্পের অনেক রোহিঙ্গা বলেছেন, “বাংলাদেশ আমাদের দেশ নয়, সারাজীবন এখানে থাকতে চাই না।” তাদের এই আকুতি তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার প্রতিফলন।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ:

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় মিয়ানমারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব একটি বড় বাধা। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আসিয়ান, জাতিসংঘ এবং দাতা দেশগুলোকে নিয়ে বিস্তৃত পরিসরে একটি রোডম্যাপ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তবে, রাখাইনে আরাকান আর্মির প্রভাব এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা কঠিন হতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা:

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া দ্রুততর করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, এই প্রক্রিয়া ধীরগতিতে এগোচ্ছে, যা রোহিঙ্গাদের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত উদ্যোগ এবং মিয়ানমারের সদিচ্ছা ছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

প্রত্যাবাসনের আশায় বুক বাঁধছেন রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। তবে, এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সফল করতে মিয়ানমারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত উদ্যোগ এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। জাতিসংঘ মহাসচিবের সাম্প্রতিক সফর এই প্রক্রিয়ায় নতুন গতি সঞ্চার করবে বলে রোহিঙ্গারা আশা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *