পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে শ্রীলঙ্কার সহায়তা চেয়েছে সরকার
বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য শ্রীলঙ্কার সহায়তা চেয়েছে। এই উদ্যোগটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অর্থ পাচার: বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন যে, একজন ব্যক্তি তার সন্তানের টিউশন ফি প্রদানের নামে প্রায় ৪০০-৫০০ কোটি টাকা বিদেশে পাঠিয়েছেন, যা অর্থ পাচারের একটি উদাহরণ।
শ্রীলঙ্কার সহায়তা চাওয়ার কারণ
শ্রীলঙ্কা সম্প্রতি অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করেছে, যা তাদের এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ করে তুলেছে। বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হারিনিয়া আমারাসুরিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে সহযোগিতা চান। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী জানান যে, তাদের পার্লামেন্ট অর্থ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে নতুন আইন অনুমোদন করেছে।
অর্থ ফেরত আনার চ্যালেঞ্জ ও করণীয়
অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অডিট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছে ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণগত মান পর্যালোচনা করতে এবং পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, সরকার পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অর্থ পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ট্রিটি (MLAT) স্বাক্ষর করেছে, যা তথ্য বিনিময় এবং আইনগত সহায়তা প্রদান করে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সহযোগিতা এই প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে শ্রীলঙ্কার সহায়তা চেয়েছে সরকার। অর্থ পাচার রোধ এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। শ্রীলঙ্কার সহায়তা চেয়ে সরকার এই ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ভবিষ্যতে আরও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার দ্বার উন্মুক্ত করবে।