বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে যাচ্ছে তরুণদের নেতৃত্বাধীন নতুন রাজনৈতিক দল “জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)”। আগামীকাল শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিকাল ৩টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এই দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এই উপলক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে
আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ
প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ
বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র প্রদান করেন। আমন্ত্রণপত্র গ্রহণের পর ড. ইউনূস নতুন দলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “সব রাজনৈতিক দল মিলেমিশে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে। সবাই একসঙ্গে যেন দেশের জন্য কাজ করতে পারে, সেই পরিবেশ উপহার দেব।”
দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
“জাতীয় নাগরিক পার্টি” মূলত তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গঠিত একটি রাজনৈতিক দল, যা দেশের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে। দলের প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হলো:
- গণতন্ত্রের সুরক্ষা ও স্বচ্ছ রাজনীতি প্রতিষ্ঠা: দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
- দুর্নীতি প্রতিরোধ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ: সকল স্তরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।
- তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান বৃদ্ধি: নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব হ্রাস করা।
- নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা প্রসার: নারীদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান।
- স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন এবং সবার জন্য চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা: সবার জন্য মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন
নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানটি মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে একটি অস্থায়ী মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক, সরকারের সাবেক আমলা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য এবং আহত যোদ্ধারা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া, আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রবাসীদের প্রতিনিধি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
নিরাপত্তা ও অন্যান্য ব্যবস্থা
অনুষ্ঠানে আগত ছাত্র-জনতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মেডিকেল টিমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। নারীদের জন্য থাকবে আলাদা বসার ব্যবস্থা। সারা দেশ থেকে আগত লাখো কর্মী-সমর্থকদের সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ ও অবস্থান নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলের আমন্ত্রণ
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ মোট ২৮টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের কোনো দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
“জাতীয় নাগরিক পার্টি”র আত্মপ্রকাশ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত এই দলটি দেশের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং সমতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।