
ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল
ধর্ষণ সমাজের জন্য এক ভয়াবহ ব্যাধি। প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও নারী ও শিশুরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণের শিকার পরিবারগুলো বিচার পেলেও অনেক ক্ষেত্রে অপরাধীরা আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে এবং ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অনুষ্ঠিত হলো এক বিশাল মশাল মিছিল।

ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল
গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠন একত্রিত হয়ে এই মশাল মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলটি টিএসসি চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর ঘুরে আবার টিএসসিতে এসে শেষ হয়। পুরো মিছিল জুড়ে ছিল একটাই স্লোগান—”ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসি চাই, বিচারহীনতা চলবে না।”
এই মশাল মিছিল শুধু শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; সাধারণ মানুষও এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। নারীবাদী সংগঠন, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানায়। তারা মনে করেন, ধর্ষণের শাস্তি যতদিন কঠোর ও প্রকাশ্যে কার্যকর করা না হবে, ততদিন এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব নয়।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, ধর্ষণ একটি নারকীয় অপরাধ, যার উপযুক্ত শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা ও দুর্বল আইনি কাঠামোর কারণে ধর্ষকরা অনেক সময় শাস্তি এড়িয়ে যায়। তাই দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসি কার্যকর করার দাবি ওঠে।
মশাল মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে প্রকাশ্যে ফাঁসির বিধান কার্যকর করতে হবে। এছাড়া নারী ও শিশুর সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন এবং তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করাও জরুরি।
শুধু আইন করলেই হবে না, বরং সমাজকেও ধর্ষণের বিরুদ্ধে জাগতে হবে। প্রত্যেক পরিবারে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি ধর্ষকদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে, যেন তারা সমাজে টিকে থাকতে না পারে ।
ধর্ষণমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য শুধু আইন নয়, জনসচেতনতা ও কঠোর সামাজিক প্রতিরোধ প্রয়োজন। ঢাবিতে আয়োজিত এই মশাল মিছিল প্রমাণ করে, জনগণ ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি চায়। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সকলকে একসাথে দাঁড়াতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো নারী বা শিশু ধর্ষণের শিকার না হয়। “ধর্ষকের প্রকাশ্যে ফাঁসি” কার্যকর করলেই কেবল ধর্ষণ বন্ধ হবে এবং সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে।