
দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন
বাংলাদেশের দীর্ঘতম রেলসেতু, যমুনা রেলসেতু, আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ ২০২৫) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে সেতুর পূর্ব প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেতুটির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন সভাপতিত্ব করেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক ইতো তেরুয়ুকি।
উদ্বোধনী ট্রেনটি সেতুটি মাত্র সাড়ে তিন মিনিটে অতিক্রম করে, যেখানে পূর্বে যমুনা সেতু দিয়ে ট্রেন পার হতে ২০ মিনিট সময় লাগত। নতুন সেতু দিয়ে ট্রেনগুলো ৯০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করবে, যা পরবর্তীতে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
সেতুটি চালু হওয়ায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। এটি অভ্যন্তরীণ রেল যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি ট্রান্স এশিয়ান রেলপথে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করবে। এতে আমদানি-রপ্তানি খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি যমুনা সেতু ও মহাসড়কের ওপর চাপ কমবে। উত্তরাঞ্চল থেকে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা সহজ হবে, যা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সামাজিক জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর যমুনা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলওয়ে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
নতুন সেতু দিয়ে দিনে ৩২টি ট্রেন চলাচল করবে, যা পূর্বের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। এটি দেশের রেল পরিবহন ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনবে এবং যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ সাশ্রয় করবে।
দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন। এই সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি মাইলফলক এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।