দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধারে ৫-১০ বছর সময় লাগবে: গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন যে, দেশের দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার (রিকভার) করতে ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগতে পারে। তিনি জানান, প্রতিদিনই এই ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে এবং তাদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতোমধ্যে তাদের পর্যাপ্ত তারল্য সহায়তা প্রদান করেছে।
দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধারে ৫-১০ বছর সময় লাগবে: গভর্নর
দুর্বল ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থা:
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে কিছু ব্যাংক বর্তমানে আর্থিক দুর্বলতায় ভুগছে। এই দুর্বলতা সৃষ্টির পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যেমন:
-
অপ্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান: অনেক ব্যাংক ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পে ঋণ প্রদান করেছে, যা পরবর্তীতে অনাদায়ী ঋণে (এনপিএল) পরিণত হয়েছে।
-
পর্যাপ্ত তদারকির অভাব: ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির অভাবে আর্থিক অনিয়ম বৃদ্ধি পেয়েছে।
-
অর্থনৈতিক মন্দা: বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাবে ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে গেছে, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলেছে।
পুনরুদ্ধারের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ:
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের মতে, দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে:
-
তারল্য সহায়তা প্রদান: কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সহায়তা প্রদান করছে।
-
ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষণ: প্রতিদিন ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
-
ক্যাপিটালাইজেশন: ব্যাংকগুলোর মূলধন বৃদ্ধি করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
পুনরুদ্ধারের সময়কাল:
গভর্নরের মতে, দুর্বল ব্যাংকগুলোর সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারে ৫ থেকে ১০ বছর সময় লাগতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন যে, দেশের অন্যান্য ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধারেও একই সময় লেগেছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করা হয়েছে:
-
কার্যকর তদারকি: ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি বাড়াবে।
-
প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন: ব্যাংক কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
-
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা: ঝুঁকি নিরূপণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যাংকগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে।
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনরুদ্ধার একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, এই ব্যাংকগুলো আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে।