ঢাবিতে হিযবুত তাহরীরের সমাবেশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সাম্প্রতিক মিছিলের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
ঢাবিতে হিযবুত তাহরীরের সমাবেশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
হিযবুত তাহরীরের মিছিল ও পুলিশের প্রতিক্রিয়া
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে হিযবুত তাহরীরের সদস্যরা ‘মার্চ ফর খিলাফত’ নামে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘খিলাফত, খিলাফত’ স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যান। পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে এবং কয়েকজনকে আটক করে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের প্রতিক্রিয়া ও দাবি
হিযবুত তাহরীরের এই মিছিলের প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা হিযবুত তাহরীরের তৎপরতা বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেন। তারা অভিযোগ করেন, হিযবুত তাহরীরের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করছে এবং সরকার তাদের কার্যক্রম প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, “শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমলের পতনের পর থেকে হিযবুত তাহরীরের মত অনেকগুলো জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা বেড়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখেছি হিযবুত তাহরীর উগ্রবাদের চর্চা করে। ৫ অগাস্টের পর থেকে তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে গেছে। তাদের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী?”
সমাবেশে বক্তারা হিযবুত তাহরীরের মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তারা বলেন, “যারা আজ এই সমাবেশ করেছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে তাদের মদদদাতাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বক্তারা অভিযোগ করেন, হিযবুত তাহরীরের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধির পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা বলেন, “দীর্ঘ ছয় মাস পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজকে আমরা দেখেছি পুলিশ প্রশাসন নামমাত্র তাদের বাধা প্রদান করেছে। আমরা বলতে চাই উগ্রবাদের কোনো ঠাঁই হবে না।”
হিযবুত তাহরীরের মিছিল এবং এর প্রতিবাদে ঢাবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিক্ষোভ-সমাবেশ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।