চট্টগ্রাম মহানগরীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ৩৪ জন
চট্টগ্রাম মহানগরীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন থানায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে যুবলীগ কর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন।
অভিযানের পটভূমি
চট্টগ্রাম মহানগরীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৩৪ জন গ্রেফতার। সাম্প্রতিক সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নগর পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনসহ বিভিন্ন আইনে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের পরিচয়
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন:
-
সাইফুল ইসলাম (৩২): কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সদস্য।
-
আশিষ কুমার নাথ (৪৫): শিকলবাহা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
-
আক্তারুজ্জামান চৌধুরী (৪৫): ১১ নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড খ-ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি।
-
হারুনুর রশিদ (৪৮): ৩৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়াও অন্যান্য গ্রেফতারকৃতরা হলেন: আবেদুজ্জামান আমরী (৪২), মো. শাহরাজ (২৪), মো. আলমগীর (৩০), মো. খাইরুল আলম (৩৭), মো. জুয়েল রানা (২৭), মো. আনোয়ার হোসেন (২২), সুকিমং চাকমা (৩০), মো. ফরহাদ (২৭), মো. মাহতাব মোল্লা (৩২), ইমরান হোসেন ওরফে এমরান (২৩), মো. মহি উদ্দিন (২৯), মো. শাকিবুল হাসান অনিক (২৩), মো. সাগর (২৮), মো. সাদ্দাম হোসেন (৩০), মো. রিয়াজ (২৫), মো. আলাউদ্দিন (৫০), মো. ইসমাইল হোসেন (৩৬), জহিরুল ইসলাম (২৪), মো. মামুন (২০), মো. রাশেদ মিয়া (২৪), মো. মাসুম (২৯), মো. রাসেল হাওলাদার (২২), শওকত নুর (২৬), মো. আব্দুল মোতালেব (৪৮), মো. সাগর (২৪), মো. সিয়াম (২০), মনির আসলাম (২৩), মো. জাহাঙ্গীর (২৮), মো. শাকিল (২১), মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মো. সুমন (২০), মেহেরাজ রহমান রাকিব (২৯) ও গোলাপী বেগম (৪৬)।
অভিযানের ফলাফল ও প্রতিক্রিয়া
পুলিশের এই বিশেষ অভিযানে নগরীতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী, অপরাধের পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অবৈধ অস্ত্রধারীও রয়েছেন। নগর পুলিশের এই পদক্ষেপে সাধারণ জনগণ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। তবে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু নেতাকর্মী এই গ্রেফতারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
সাম্প্রতিক অভিযানের ধারাবাহিকতা
এর আগে, ১৫ মার্চ ২০২৫ তারিখে চট্টগ্রাম মহানগরীতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই সময়েও পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন মামলার আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
সাধারণ জনগণের প্রতিক্রিয়া
নগরীতে পুলিশের এই ধরনের অভিযানে সাধারণ জনগণ মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তারা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই এই অভিযান পরিচালনা করেছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ৩৪। চট্টগ্রাম মহানগরীতে পুলিশের এই বিশেষ অভিযান আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে নগরীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রচেষ্টা চলছে। সাধারণ জনগণ আশা করছেন, এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে নগরীতে অপরাধমূলক কার্যক্রম কমে আসবে এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।