ওলীকুল সরদার হুযূর গাউসেপাকের আদর্শ চরিত্র-সৌন্দর্য
বিশ্বকুল সরদার সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর
মহান চরিত্রের প্রতিচ্ছবিই
মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নানসরকার
“গাউসেপাক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর আদর্শ চরিত্র ও মানবতাবাদী শিক্ষা”।
গাউসে পাক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর আদর্শ জীবনের প্রতিটি দিকই যেমন বিরল ধরণের, তেমনি একান্ত অনুকরণীয়। তাঁর চরিত্র-সৌন্দর্যও অনুরূপ। এক কারণ হচ্ছে- তিনি ছিলেন নবীকুল সরদার হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ওই মহান চরিত্রের প্রতিচ্ছবি, যার প্রশংসায় খোদ আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন, ইন্নাকা লা‘আলা- খুলুক্বিন ‘আযী-ম। (নিশ্চয় আপনি হলেন মহান চরিত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত। সূরা ক্বালাম : আয়াত-৪: কানযুল ঈমান) এবং ইন্নাকা লা‘আলা- হুদাম্ মুস্তাক্বী-ম। (নিশ্চয় আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। সূরা হজ্জ্ : আয়াত -৬৭ : কান্যুল ঈমান)
হুযূর গাউসে পাক এত উঁচু মানের মহত্ব ও মর্যাদার অধিকারী হওয়া সত্বেও নির্দ্বিধায় গরীব-মিসকীনদের সাথে বসে যেতেন, দরিদ্র-অসহায়দের প্রতি অস্বাভাবিক বিনয় প্রদর্শন করতেন। বড়দের প্রতি সম্মান এবং ছোটদের প্রতি স্নেহ দেখাতেন। কারো সাথে সাক্ষাৎ হতেই প্রথমে তাকে সালাম করতেন। মেহমান ও সাক্ষাৎ-প্রার্থীদের কে হাসিমুখে বরণ করতেন এবং দীদার দানে ধন্য করতেন। তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিকে উপেক্ষা করতেন ও ক্ষমা করে দিতেন। যখন কেউ আল্লাহ্র শপথ করে কোন কথা বলতো, তা যদিও ডাহা মিথ্যাও হতো, তিনি তা গ্রহণ করে নিতেন, নিজের কাশ্ফকে তার নিকট থেকে গোপন রাখতেন।
অহংকারী, যালিম, নাফরমান এবং ধনী লোকদের নিকট অবস্থান করতেন না। কখনো বাদশাহ, মন্ত্রী ও সরকারী আমীর-ওমারার নিকট যেতেন না। তাঁর সমসাময়িকদের মধ্যে কেউ সুন্দর চরিত্র, দানশীলতা, ক্ষমা ও উপেক্ষার মধ্যে তাঁর সমকক্ষ ছিলোনা। হুযূর গাউসে আ’যমের মধ্যে আল্লাহ্ জাল্লা শানুহূর ইবাদত-বন্দেগী ও অনুগত্য এবং তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর আনুগত্য, অনুসরণের মধ্যে কোনরূপ কমতি ছিলোনা। এ কারণে তাঁর প্রতিটি কাজ ইসলামী শিক্ষারই অনুরূপ ছিলো। আল্লাহ্ তা‘আলারও ইচ্ছা হচ্ছে যেন প্রত্যেক মানুষ সৃষ্টি জগতের প্রতিটি সৃষ্টের সাথে ভালবাসা, হামদর্দী , স্নেহ ও মায়া-মমতা প্রদর্শন করুক। রসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহ তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের আদর্শও এটাই ছিলো। সুতরাং হুযূর গাউসে আ’যমও আল্লাহ্র মাখলূক্বদের প্রতি সারা জীবন সমবেদনা, স্নেহ ও মায়া-মমতাই প্রদর্শন করে গেছেন। তাই, শুধু মানুষই না, বরং আল্লাহ্র যে কোন মাখলূক্কে আরাম পৌঁছানো শাহানশাহে বাগদাদের পবিত্র স্বভাবের অবিচ্ছেদ্য অংশই ছিলো।
আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট বান্দার উত্তম চরিত্র বেশী পছন্দনীয়। বিশ্বের মহান শিক্ষাদাতা হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহ তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের পবিত্র ঘোষণাও রয়েছে যে, ইনসাফের মীযানে মানুষের সর্বাপেক্ষা ভারী জিনিস হবে তার উত্তম চরিত্র। হুযূর-ই আকরাম অন্য হাদীসে এরশাদ করেছেন, “খাসলাতা-নে আহাব্বু ইলাল্লা-হি তা‘আলা আস্ সাখা-উ ওয়া হুসনুল খুলক্বি।” (আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট দু’টি স্বভাব বেশী পছন্দনীয় : দান ও সুন্দর চরিত্র।) কারো সাথে খুশীমনে ও হাসিমুখে কথা বলাও নেকীর সামিল।
সরকার গাউসে আ’যম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, “দু’টি জিনিস বুনিয়াদী ও পছন্দনীয় দৃষ্টিগোচর হয় : সুন্দর চরিত্র ও ক্ষুধার্তদের আহার করানো। যদি সমগ্র দুনিয়ার ধন-দৌলত আমার অর্জিত হয়ে যায়, তবে আমি সমস্ত সম্পদ ক্ষুধার্তদেরকে খাওয়ানোর কাজে ব্যয় করবো। প্রত্যেকের সাথে উত্তম চরিত্রের সাথে আচরণ করবো।” তাঁর এ উক্তিগুলো থেকে তাঁর অতি উন্নত মানসিকতা ও মর্যাদার প্রমাণ বহন করে।
যেই মানুষের মধ্যে দয়া ও বদান্যতার আগ্রহ থাকেনা, কারো দুঃখ-দুর্দশা ও মুসীবৎ দেখে যার মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়না, ওই মানুষ কামিল হতে পারেনা। রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহ তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “ইরহামূ- মান ফিল আরদ্বি ইয়ারহামকা মান ফিস্ সামা-ওয়া-তি।” ( তোমরা পৃথিবীবাসীদের উপর দয়া করো, আসমানে যিনি আছেন, তিনি তোমাদেরকে দয়া করবেন।) সরকার গাউসে আ’যম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর প্রশংসিত সত্তার মধ্যে গরীব ও দুর্বলদের জন্য দয়া ও বদান্যতার এক অবর্ণনীয় আগ্রহ ও অস্থিরতা ছিলো। এ মহান কাজগুলো করতে পারলে তিনি খুব আনন্দ পেতেন। বর্ণিত আছে যে, তিনি প্রায়শ বলতেন, আমি গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করে দেখে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, ক্ষুধার্তদের আহার করানো এবং দুনিয়াবাসীদের সাথে সুন্দর ব্যবহারের চেয়ে বড় না কোন নেকী আছে, না কোন আমল আছে।
হযরত আবূ আবদুল্লাহ্ মুহাম্মাদ ইবনে খাদ্বির হোসায়নী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি থেকে বর্র্ণিত যে, একদা হযরত গাউসে আ’যমের দৃষ্টি এক পেরেশানীগ্র্স্ত ফকী¡রের উপর পড়লো, একজন দূঃখী মানুষকে দেখে তাঁর মন ব্যাকুল হয়ে গেলো। সুতরাং কাল বিলম্ব না করে তিনি তাকে বললেন, “মা- শানুকা ? তোমার কি অবস্থা?” ফক্বীরটি তার অক্ষমতার কথা উল্লেখ করে বললো, “সমুদ্রের অপর তীরে যাওয়া আমার খুবই প্রয়োজন। কিন্তু আমার নিকট টাকা-পয়সা না থাকার কারণে শত অনুনয়-বিনয় করা সত্বেও মাঝি তার নৌযানে আমাকে বসাতে রাজি হচ্ছেনা। ফলে আমি ব্যর্থ মনোরথ হয়ে পড়েছি। যদি আমার নিকট কিছু অর্থ থাকতো, তবে আমাকে এ দুরবস্থার সম্মুখীন হতে হতোনা।” ঘটনাচক্রে ওই সময় হুযূর গাউসে পাকের নিকটও কোন অর্থকড়ি ছিলোনা। কিন্ত লোকটার পেরেশানী তাঁর বরদাশ্ত হচ্ছিলোনা। সুতরাং তিনি সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র দরবারে দো‘আর হাত প্রসারিত করলেন। সুতরাং হঠাৎ এক ব্যক্তি এসে তাঁর হতে আশরাফী (স্বর্ণমূদ্রা) ভর্তি একটি থলে পেশ করলো। তিনি খুব খুশী হলেন। আর তাক্ষণিকভাবে তিনি ওই ফক্বীরকে ডেকে বললেন, “এ থলে নিয়ে যাও আর মাঝিকে দিয়ে দাও। আর বলে দাও, “ভবিষ্যতে কোন দরিদ্রকে তোমার নৌযানে আরোহণ করাতে অস¦ীকার করোনা।”
ওই যুগের প্রধান বিচারপতি হযরত আবূ নসর রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বর্ণনা করেছেন, আমার পিতা শায়খ আবদুর রাযযাক্ব রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি আমাকে বলেছেন, একদা সরকার গাউসে আ’যম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হজ্জে তারশীফ নিয়ে গেলেন। সফরের মানযিলগুলো অতিক্রম করতে করতে তিনি যখন আ-জিলাহ নামক কসবার নিকটে পৌঁছলেন, তখন তিনি সেখানে অবস্থানের ইচ্ছা পেশ করলেন। আর খদিমকে হুকুম দিলেন যেন এ আ-জিলাহ্ কসবায় গিয়ে জেনে এসো- এ কসবায় সব চে য়ে গরীব ও দূঃখকিøষ্ট লোক কে আছে। আর একথা জেনে নেয়ার পর তিনি তার বাড়িতে তাশরীফ নিয়ে গেলেন। দেখলেন এক পুরাতন ঘর। তাতে কিছু ছেঁড়া কাপড় ছাড়া আর কিছুই নজরে পড়লোনা। আর তাতে এক বৃদ্ধ লোক, এক দুর্বল বয়স্ক মহিলা ও এক মেয়ে বসে আছে। ইসলামী নিয়ম মোতাবেক সর্বপ্রথম সালাম দিয়ে ওই বৃদ্ধলোকের নিকট ওই ভাঙ্গা ঘরে অবস্থানের অনুমতি চাইলেন। বৃদ্ধটি তাঁকে অনুমতি দিলো। হুযূর গাউসে আ’যম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর মহান সত্তা তেমনি ছিলোনা যে, তিনি কোন জায়গায় তাশরীফ নিয়ে যান, কিন্তু তাঁর শুভাগমনের খবর গোপন থাকতো। সুতরাং তিনি সেখানে অবস্থান করার সাথে সাথে আ-জিলাহ্ কসবার পীর-মাশাইখ ও ধনী লোকদের আসা-যাওয়া শুরু হয়ে গেলো। দেখতে দেখতে সেখানে এক বিরাট লোক-সমাগম হয়ে গেলো। সবাই অতি বিনয় সহকারে আরয করতে লাগলো, “এখানে তো অবস্থান করতে আপনার কষ্ট হচ্ছে। তাই হয়তো আপানি আমাদের কারো ঘরে তাশরীফ নিয়ে চলুন, অথবা অন্য কোন সুবিধাজনক জায়গা অবস্থানের জন্য বেছে নিন।” কিন্তু তিনি কারো দরখাস্ত কবুল করেন নি। শেষ পযন্ত আ-জিলার মাশাইখ এবং ধনী ও নেতৃস্থানীয় লোকেরা সেখানেই তাঁর সেবা করতে লাগলেন। অল্প সময়ের মধ্যে সেখানে স্বর্ণ-রৌপ্য, কাপড়-চোপড় ও মাল-সামগ্রী ইত্যদির স্তুপ লেগে গেলো। লোকজনের সমাগম এতো বেশী হয়ে গেলো যে, ঘরটিতে তিল ধারণের জায়গা ছিলোনা। হুযূর গাউসে আ’যমের এ সদয় অবস্থানের মধ্যে এ শিক্ষা রয়েছে যে, তিনি এতো মহা মর্যাদার অধিকারী হওয়া সত্তেও এক নেহাত গরীব-অসহায়ের ঘরে অবস্থানে কোনরূপ দ্বিধাবোধ করেন নি। তদুপরি, তাঁর অবস্থানের বরকতে ওই গরীব পরিবারের আর্থিক ও সামাজিক অকল্পনীয় উন্নতিও সাধিত হয়েছিলো।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে শো‘আয়ব রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বর্ণনা করেছেন যে, সরকার গাউসে আ’যম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু দুর্বল, গরীব ও মিসকীনদের আতিমাত্রায় ভালবাসতেন। আর প্রায়শ বলতেন, ধনী লোকদেরকে তো সবাই ভালবাসে, তারা যেখানেই যায়, সেখানকার লোকেরা তাদেরকে সম্মান করে। কিন্তু গবীব বেচারাদের কথা কে ভাবে? কে তাদের খোঁজ-খবর নেয়? আমিও কি তাদেরকে ভালবাসবোনা? সুতরাং অনেক বর্ণনায় এসেছে যে, তাঁর বরকতময় দরবারে ধনী দরিদ্র সবাইকে সমানভাবে সম্মান দেয়া হতো। কখনো কাউকে সঙ্গত কারণে কটু ভাষায় কথা বলে ফেললে অল্পক্ষণের মধ্যে তিনি তার প্রতি দয়া পরবশ হয়ে যেতেন এবং তার মনের দুঃখ দূরীভূত করার চেষ্টা করতেন।
সৃষ্টির প্রতিও তাঁর মায়া-মমতার কমতি ছিলোনা। একদা হুযূর গাউসে আ’যম ওয়া’য করছিলেন। ইত্যবসরে এক চিল এসে ওয়াজের মজলিসে শোর-চিৎকার শুরু করে দিলো। দীর্ঘক্ষণ ধরে সেটা ওয়া’যের মজলিসের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে একাগ্রতায় বাধা সৃষ্টি করে যাচ্ছিলো। কিন্তু সেটার শোরগোল বন্ধ হচ্ছিলোনা। সুতরাং তাঁর মধ্যে জালাল (রাগ বিশেষ) এসে গেলো। তাই তিনি সেটার প্রতি ক্রোধের দৃষ্টিতে দেখলেন। সাথে সাথে চিলটি ধড়ফড় করতে করতে মাটিতে পড়ে মরে গেলো। তিনি কালবিলম্ব না করে মিম্বর থেকে নেমে আসলেন এবং পাখীটির গায়ে স্নেহভরা হাত বুলিয়ে দিলেন এবং আল্লাহ তা‘আলা দরবারে সেটাকে পুনরায় জীবিত করে দেয়ার জন্য দো‘আ করলেন। সাথে সাথে আল্লাহর হুকুমে সেটা জীবিত হয়ে গেলো। তারপর তিনি সেটার উদ্দেশে বললেন, “উড়ে যা।” সুতরাং সেটা শূন্যে উড়ে গেলো।
এভাবে হুযূর গাউসে আ’যম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর দয়া ও বদান্যতা এবং তাঁর উন্নত চরিত্র ও স্বভাবের বহূ উদাহরণ পেশ করা যাবে। কলেবর বৃদ্ধি এড়ানোর জন্য এখানে উল্লেখ করলামনা।
আমাদের রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উন্নত চরিত্রকে পূর্ণতা দানের জন্য ধরাবুকে তাশরীফ এনেছেন। তিনি সেটার বাস্তব শিক্ষাও দুনিয়াবাসীকে দিয়েছ্নে। সুতরাং সেই শিক্ষা গ্রহণের ধরণগুলে অতি সহজে রপ্ত করা যায় বিশেষত আল্লাহ্ তা‘আলার মহান ওলী গণের আদর্শ জীবন থেকে। কারণ তাঁদের জীবন চরিত ও কর্মকাণ্ড হচ্ছে রসূলে পাকের সেই ‘উস্ওয়া-ই হাসনাহ’ বা উত্তম আদর্শের প্রতিচ্ছবি। তাঁদের সব কিছুই হচ্ছে ওই উত্তম আদর্শের অনুরূপ। আসুন, আমরা তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণের মধ্য দিয়ে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট হই। আল্লাহ তাওফীক্ব দিন! আ-মী-ন। বিহরমতে সায়্যিদিল মুরসালী-ন ওয়া আ-লিহী ওয়া সাহবিহী আজমা‘ঈন।
লেখক, মহা পরিচালক, আন্জুমান রিসার্চ সেন্টার, চট্টগ্রাম