আরও তিন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি খাতের আরও তিনটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে। ব্যাংকগুলো হলো এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংক। ১২ মার্চ, বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নেয় এবং ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ১৩ মার্চ দেওয়া হবে।
আরও তিন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক
পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার কারণ
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংক তিনটির পরিচালনা পর্ষদে অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ পর্যালোচনার পর আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বিশ্লেষকদের মতে, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনতে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নতুন পরিচালনা পর্ষদ
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি ব্যাংকের জন্য নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক:
- চেয়ারম্যান: আলী হোসেন প্রধানিয়া (বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক এমডি)
- পরিচালক:
- মো. আবুল বশর (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক)
- আনোয়ার হোসেন
- মো. নুরুল হক (সোনালী ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি)
- ব্যারিস্টার মো. শফিকুর রহমান (সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী)
- ড. সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ (আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক)
- মুহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ (চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট)
মেঘনা ব্যাংক:
- উদ্যোক্তা পরিচালক:
- উজমা চৌধুরী (প্রাণ গ্রুপের পরিচালক)
- তানভীর আহমেদ (ক্যাসিওপিয়া ফ্যাশনের প্রতিনিধি)
- স্বতন্ত্র পরিচালক:
- মো. মামুনুল হক (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক)
- রজব আলী
- মো. নজরুল ইসলাম (যমুনা ব্যাংকের সাবেক এমডি)
- হাবিবুর রহমান (প্রাইম ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক)
- মো. আলি আকতার রিজভী (চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট)
এনআরবি ব্যাংক:
- চেয়ারম্যান: ইকবাল আহমেদ ওবিই (প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান)
- পরিচালক:
- ফেরদৌস আরা বেগম (গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক)
- শেখ মো. সেলিম (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক)
- মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী (মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক এমডি)
- শেখ মতিউর রহমান (প্রাইম ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি)
- শরীফ নুরুল আহকাম (নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক)
- মিজানুর রহমান এফসিএ (চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট)
অতীতের পুনর্গঠনের নজির
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছিল। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, গ্লোবাল, ইউনিয়ন, ন্যাশনাল ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পর্ষদ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্দেশ্য
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা এবং সুশাসন নিশ্চিত করাই এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য। ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকিং খাতের জন্য ইতিবাচক হতে পারে।